|
ব্রণ দূর করতে যে ৪টি উপাদান কার্যকর, যে ৪টি অকার্যকর |
ত্বকের সমস্যাগুলোর মাঝে অন্যতম হলো ব্রণ। খুব সহজেই এরা ত্বকে দাগ ফেলে দিতে পারে। কিন্তু সাধারণ একটা ব্রণের জন্য তো আর ডাক্তারের কাছে যাওয়া যায় না। এ কারণে আমরা বাড়িতেই এটাসেটা ব্যবহার করে ব্রণের উপদ্রব থেকে মুক্তি পাবার চেষ্টা করি। কিন্তু এসব উপায় কী সবসময় কাজ করে? ডার্মাটোলজিস্টদেড় মতে কিছু কিছু উপায় আসলেই কাজ করে, কিছু আবার উল্টো ত্বকের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। চলুন জেনে নেই এগুলোর ব্যপারে।
কার্যকরী উপাদান- টি ট্রি অয়েল
গবেষণাতেই দেখা গেছে হালকা থেকে মাঝারি ধরণের ব্রণ দূর করতে এটি বেশ কার্যকরী। জ্বালাপড়া করতে থাকা, লালচে ব্রণের উপশম করতে পারে টি ট্রি অয়েল। এই অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে ব্রণ দূর করতে পারে। এটা ব্যবহার করার জন্য ৫ পার্সেন্ট টি-ট্রি অয়েল সলিউশন নিয়ে সমপরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে নিন। এই পানিতে একটা কটন বল ভিজিয়ে দিনে এক-দুইবার প্রয়োগ করুন ব্রণের ওপর।
কার্যকরী উপাদান- অ্যাসপিরিন
অ্যাসপিরিন মূলত ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডসের ক্ষেত্রে কাজ করে ভালোভাবে। এটা এক ধরণের স্যালিসাইলিক এসিড, যা কিনা অনেক ব্রণ দূর করার ক্রিমে থাকে। এটা পোর খুলে দিতে সাহায্য করে এবং ব্ল্যাকহেড বা হোয়াইটহেড দূর করে দেয়। এটা কীভাবে ব্যবহার করবেন? দুটো অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট গুঁড়ো করে নিন, ২ টেবিল চামচ পানির সাথে মেশান এবং এই পেস্ট ব্রণে দিয়ে রাখুন এক-দুই মিনিট। এরপর ধুয়ে ফেলুন।
কার্যকরী উপাদান- অ্যাপল সাইডার ভিনেগার
ত্বকের ওপর অ্যাপল সাইডার ভিনেগারের প্রভাব নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি কিন্তু এটার অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ব্রণ দূর করতে উপকারী হতে পারে। এটা অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট, এ কারণে তেল কমাতেও কার্যকরী। টি ট্রি অয়েলের মতোই সমপরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে এটা ব্যবহার করতে হবে। এই মিশ্রণ তুলোয় ভিজিয়ে এক-দুই মিনিট ব্রণের ওপর রাখতে হবে।
কার্যকরী উপাদান- গ্রিন টি
গ্রিন টিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে বলে এটা ব্রণের যন্ত্রণা কমায় আর ব্যাকটেরিয়াও দূর করে। কিছুটা গ্রিন টি তৈরি করে এটা ঠাণ্ডা করে একটা কাপড় ভিজিয়ে মুখে দিতে পারেন। অথবা টি ব্যাগটাকে ঠাণ্ডা করে সরাসরি ব্রণের ওপর রাখতে পারেন ২০ মিনিট পর্যন্ত।
এ তো গেলো কার্যকরী উপাদানের কথা। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে আমরা এমন কিছু উপাদানও ব্যবহার করে থাকি যা আদতে ত্বকে প্রয়োগ করা মোটেই উচিৎ নয়। বরং এগুলোর ব্যবহারে ব্রণের উপদ্রব আরও বেড়ে যেতে পারে। দূরে থাকুন এসব উপাদান থেকে-
সবচাইতে খারাপ- রাবিং স্পিরিট
কারণ এটি ত্বক থেকে উপকারী তেল এবং প্রোটিন শুষে নেয়। ফলে ত্বকের অবস্থা আগের চাইতেও খারাপ হয়ে যায়।
বেশ খারাপ- টুথপেস্ট
ব্রণ দেখা দিলেই সাথে সাথে টুথপেস্ট লাগাতে হবে সেখানে, এমনটা যারা ভাবেন তারা ভুল। কারণ আমাদের দাঁতের মতো শক্তি জিনিসে প্রয়োগের জন্য টুথপেস্ট তৈরি করা হয়, ত্বকের মতো কোমল জায়গায় নয়। এটা ত্বক শুকিয়ে এবং জ্বালাপোড়া তৈরি করে পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে।
মোটামুটি খারাপ- লেবুর রস
লেবুর রস খারাপ, কারণ এটাও তেল শুষে নেয় ত্বক থেকে। আর এতে থাকা ফ্রুট এসিড ত্বকে জ্বালাপোড়া তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে এটা দেবার পর যদি আপনি রৌদ্রে যান তাহলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, হতে পারে র্যাশ।
তেমন ক্ষতিকর না হলেও অকার্যকর- মধু
মধু ত্বকের জন্য কোমল, এটা তেমন কোন ক্ষতি না করলেও আসলে ব্রণ দূর করতে তেমন কার্যকরী নয়। আর মধু ভারি হওয়ার কারণে এটা ত্বকের পোর বন্ধ করে উল্টো নতুন নতুন ব্রণ তৈরি করতে পারে।
শুধু এগুলোই নয়। ডাক্তারের দেওয়া ব্রণের ওষুধ ব্যবহার করেও দেখা যায় অনেকে ফল পান না, ব্রণ থেকেই যায়। যেসব ভুলের কারণে আপনার ব্রণ দূর হচ্ছে না তা হলো-
- মুখ পরিষ্কার না করেই ওষুধ দেওয়া
- আপনি বেশি স্ট্রেসে আছেন
- আপনার পোর বন্ধ হয়ে আছে
- আপনি বেশি ঘন ঘন মুখ ধুয়ে থাকেন
- আপনি অতিরিক্ত এক্সফলিয়েট করেন
- আপনি খুব বেশি বা খুব কম পরিমাণে ওষুধ ব্যবহার করেন
প্রাকৃতিক উপায়ে ব্রণ দূর না হলে আপনি ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন অবশ্যই। নিজে নিজে ত্বকে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করা থেকে বিরত থাকুন, ইনফেকশন হয়ে গেলে দাগ বসে যেতে পারে।