|
যেভাবে কিচেন সাজালে কমবে আপনার ওজন! |
অনেকের জন্যই ওজন কমানোর প্রক্রিয়াটি একটি অনন্ত প্রক্রিয়া। দেখা যায় কোনো একটি ব্যায়াম বা ডায়েট অনুসরণ করে কিছুদিনের জন্য ওজন কমলেও দ্রুতই তারা আবার ওজনের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। সবসময় খাওয়া দাওয়ার ওপর নজর রাখার মতো মানসিক শক্তি সবার থাকেও না। এমন একটি কৌশল আছে যাতে নিজের সচেতন ইচ্ছে ছাড়াই আপনার খাওয়া থাকবে নিয়ন্ত্রণে। আর তার জন্য আপনার কিচেনে আনতে হবে ছোট্ট কিছু পরিবর্তন। চলুন, দেখে নেই ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এসব পরিবর্তনের কথা।
১) স্ন্যাকজাতীয় খাবার রাখুন চোখের আড়ালে
আমরা সহজেই মিষ্টি কেক, বিস্কুট, চানাচুর এসবের দিকে হাত বাড়াই কারণ এগুলো থাকে টেবিল বা শেলফে, হাতের নাগালেই। এগুলো চোখের সামনে থাকার কারণে নারী-পুরুষ উভয়ের BMI বেড়ে যেতে পারে। অপরদিকে, স্বাস্থ্যকর খাবারগুলোকে চোখের সামনে রাখার ফলে সুস্থ ও ছিপছিপে শরীর ধরে রাখা সম্ভব হয়। যারা রান্নাঘরে ফল সাজিয়ে রাখেন তাদের BMI অন্যদের তুলনায় কম হতে দেখা যায়।
২) সুন্দর ডেজার্টের বাটি ব্যবহার বন্ধ করুন
অন্যরকম, সুন্দর ডিজাইনের মিষ্টি বা আইসক্রিম খাওয়ার বাটি বা চামচ আপনার এসব খাবার খাওয়ার ইচ্ছে অবধারিতভাবেই বাড়িয়ে দেবে। ডেজার্টের জন্য আলাদা বাটি না রেখে সাধারণ বাটি ও চামচ ব্যবহার করুন।
৩) ছোট প্লেট ব্যবহার করুন
স্বাভাবিক আকারের প্লেট ব্যবহারের বদলে খাওয়ার সময়ে ব্যবহার করুন হাফ প্লেট বা সালাদ প্লেট। তবে সাধারণ প্লেটের চাইতে খুব বেশি ছোট প্লেট ব্যবহার করবেন না। তাতে দেখা যাবে আপনি বারবার খাবার বেড়ে নিচ্ছেন এবং শেষতক খাওয়া কমার বদলে বেড়ে যাবে। ভাতের প্লেটের বদলে একটু ছোট একটা হাফ প্লেটে খাবার খান। এতে আপনার মনে হবে প্লেটটা বেশি ভোরে আছে এবং আপনার তৃপ্তির পরিমাণটাও বেশি হবে।
৪) টেবিলে বেশি খাবার রাখবেন না
খাবার আলাদা করে বোল-বাটিতে বেড়ে খাওয়ার টেবিলে রাখবেন না। এতে এক প্রস্থ খাওয়া হলে আপনি সহজেই খাবার তুলে নিয়ে আবার খেতে থাকবেন। বরং রান্নাঘর থেকে খাবার প্লেটে তুলে নিয়ে ডাইনিং রুমে চলে আসুন। এতে খাবার নিয়ে আসতে আপনার আবার উঠতে হবে। এই চিন্তা থেকেও আপনার খাওয়া কম হবে। আরেকটা কাজ করতে পারেন। অসাস্থ্যকর, ভারি খাবারগুলো রান্নাঘরে রাখত পারেন, কিন্তু স্বাস্থ্যকর সালাদটা রাখতে পারেন টেবিলে।
৫) বড় আকারের স্ন্যাক্সের প্যাকেট কিনবেন না
ফ্যামিলি সাইজের চিপস, বিস্কুট, চানাচুর ইত্যাদির প্যাকেট যদিও কেনা হয়, দেখা যায় আপনি একাই পুরোটা শেষ করে ফেলছেন, পরিবারের কেউ আর ভাগ বসাতে আসছে না। এমন জিনিস বাসায় পড়ে থাকলেও আপনার বারবার খেতে ইচ্ছে করবে। নিজেকে যতই বোঝান না কেন একটু খেয়ে রেখে দেবেন, দেখা যায় অনেকটাই খাওয়া হয়ে যায়। ফলে আপনার ডায়েটের বারোটা বাজে। ছোট আকারের স্ন্যাক্সের প্যাকেট কিনুন। অথবা বড় প্যাকেট কিনে বাড়িতে এনেই ছোট ছোট জিপলক ব্যাগে আলাদা করে রাখুন অল্প অল্প পরিমাণে।
৬) ফ্রিজ সাজান বুদ্ধি করে
রেফ্রিজারেটরগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা থাকে যাতে সবজি থাকে একদম নিচে, যা চোখেই পড়ে না সহজে। আপনি মোটেও এই ডিজাইন অনুসরণ করতে যাবেন না। বরং ফল ও সবজি রাখুন এমন জায়গায় যাতে সহজেই চোখে পড়ে, ফ্রিজ খুললেই যেন দেখা যায় অনেকগুলো রঙ্গিন ফল-সবজি।
৭) ব্যবহার করুন চিকন গ্লাস ও সবুজ প্লেট
ছোট, মোটা গ্লাস বা মগে আপনি যতই পান করুন না কেন মনে হবে কম হয়ে গেলো। কিন্তু লম্বা, সরু গ্লাসে পানীয় পান করলে অল্পেই মনে হবে অনেকটা পান করা হয়েছে। অস্বাস্থ্যকর পানীয় যেমন কোক, পেপসি, অন্যান্য সফট ড্রিঙ্কস, মিল্কশেক এসব পান করার ক্ষেত্রে এই কৌশল কাজে আসবে। তবে অবশ্যই পানি পান করবেন প্রচুর পরিমাণে। আর প্লেটের রং কেন সবুজ করতে বলে হচ্ছে? কারণ সবুজ রঙের প্লেটে আপনি বেশি করে সবুজ সালাদ খেতে পারবেন। কিন্তু সাদাটে ধরণের খাবার যেমন শর্করা বা প্রোটিন খেতে গেলে তার রং এই সবুজের মাঝে বেশি বোঝা যাবে, ফলে এগুলো আপনি বেশি খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হয়ে যাবেন।
এছাড়াও যেসব কাজ করতে পারেন তা হলো-
- স্বচ্ছ কন্টেইনারে রাখুন স্বাস্থ্যকর খাবার
- খাবার ঘরটাকে রাখুন গরম, কারণ ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় মানুষ বেশি খায়
- চিনির বদলে ব্যবহার করুন খেজুর
- সল্ট শেকার ব্যবহার না কর একটা বাটিতে লবণ রাখুন, হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে