|
ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করেই স্ট্রেইট করুন আপনার চুল |
বেশির ভাগ মানুষই সোজা বা স্ট্রেইট চুল পছন্দ করে কারণ সোজা চুলে যে কোন ধরণের হেয়ার স্টাইল ভালো লাগে। সবাই সোজা চুল নিয়ে জন্মগ্রহণ করেনা। একেক জনের চুলের ধরণ একেক রকম হয়। বর্তমানে স্ট্রেইট চুলের ট্রেন্ড চলছে। তাই চুল স্ট্রেইট করার জন্য অনেকেই অনেক ধরণের রাসায়নিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করেন। স্থায়ী ভাবে চুল সোজা করলেও সেটা এক বছর পর্যন্ত ঠিক থাকে। এক বছর পর চুলের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়, চুলের আগা ফেটে যায় ও শক্ত হয়ে যায়। কিন্তু আপনার রান্নাঘরেই এমন কিছু উপাদান আছে যা প্রাকৃতিকভাবে ও স্থায়ীভাবে আপনার চুলকে স্ট্রেইট করতে পারে। ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপাদান আপনার চুলের কোন ক্ষতি করেনা। তাই ঘরেই ঝলমলে, উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যবান ও সোজা চুল পেতে তৈরি হয়ে যান, প্রচুর অর্থ খরচ করা ছাড়াই।
১। দুধ
দুধের প্রোটিন চুলকে মসৃণ ও সোজা করে এবং চুলের কোঁকড়ানো ভাব দূর করে। তাই সোজা চুল পেতে চাইলে দুধ দিয়ে চুল ভেজান এবং দুধে ভেজা চুল চিরুনি দিয়ে আঁচড়ান যাতে সব চুলে দুধ পৌঁছাতে পারে ও চুলকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রদান করে শক্তিশালী করতে পারে। আধাঘন্টা এভাবে রেখে দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ভাবে চুলে দুধ ব্যবহার ও সতর্কতার সাথে চুল আঁচড়ানোর ফলে পার্লারের মতই স্ট্রেইট চুল পাবেন।
২। কুসুম গরম তেল
মাথার তালুতে তেল ম্যাসাজ করলে রক্তনালীর মধ্য দিয়ে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। এতে চুলের মধ্য দিয়ে পুষ্টির প্রবাহও ঠিক ভাবে হয়। এর ফলে চুল চকচকে ও শক্তিশালী হয় এবং চুল জমাট বাঁধেনা। নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল গরম করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করলে এই সুফলগুলো পাওয়া যায়। অলিভ অয়েল চুলকে আর্দ্রতা প্রদান করে ও এটি খুব ভালো কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত কুসুম গরম তেল মাথার তালুতে ম্যাসাজ করলে ও চুল আঁচড়ালে চুল সোজা হয়।
৩। লেবুর রস ও নারিকেলের দুধ
লেবুর রস ও নারিকেলের দুধ প্রাকৃতিক ভাবে চুল সোজা করার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। লেবুর রসের সাথে নারিকেলের দুধ মিশালে ক্রিম কন্ডিশনার তৈরি হয় যা চুলকে সোজা করতে সাহায্য করে। লেবুর রসের সাথে নারিকেলের দুধ মিশিয়ে ক্রিম তৈরি করে চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে কয়েক মিনিট রেখে দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই দিন এই প্রক্রিয়াটির পুনরাবৃত্তি করুন। আপনি নিজেই পরিবর্তন লক্ষ করবেন।
৪। অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার
সবচাইতে ক্ষমতাশালী চুল স্ট্রেইট করার উপাদান আছে আপেল সাইডার ভিনেগারে । চুলের স্বাভাবিক pH স্তর পুনরুদ্ধার করার মাধ্যমে চুলকে স্ট্রেইট করে আপেল সাইডার ভিনেগার। এছাড়াও এটি চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং মাথার তালুর ইনফেকশন দূর করে।
৫। দুধ ও মধু
ছাগলের দুধ চুল ও ত্বকের জন্য চমৎকার কাজ করে। ছাগলের দুধ পুষ্টিকর ও উপকারী উপাদানে ভরপুর। ছাগলের দুধের সাথে মধু মিশিয়ে চুলে লাগালে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং চুলকে উজ্জ্বল ও দীপ্তিময় করার পাশাপাশি চুলকে সোজা করে।
৬। কাঠ বাদামের তেল
চুলের জন্য চমৎকার ভাবে কাজ করে কাঠ বাদামের তেল। এটি চুলকে শক্তিশালী, জড়তাহীন, মসৃণ ও উজ্জল করে। এতে প্রচুর ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। আপনার ব্যবহৃত কন্ডিশনারের সাথে ৩-৪ ফোঁটা কাঠ বাদামের তেল মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করুন। সপ্তাহে তিনদিন এটি ব্যবহার করলে আপনার চুল ঝলমলে ও স্ট্রেইট হবে।
৭। ডিম ও চালের গুঁড়ো
ডিমের সাদা অংশের সাথে চালের গুঁড়ো মিশিয়ে এর সাথে এক কাপ মুলতানি মাটি ভালো ভাবে মিশান। এই মাস্কটি চুলকে সোজা করে। মাস্কটি ভালোভাবে চুলে লাগিয়ে চুল আঁচড়ান ও এক ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। এক সপ্তাহের মধ্যেই পরিবর্তন লক্ষ করবেন।
এছাড়াও চুল সোজা করার জন্য আরো যে উপাদান গুলো কাজ করে সেগুলো হল- অ্যালোভেরা, কলা ও পেঁপের মাস্ক, মিল্ক হেয়ার স্প্রে যা ঘরেই তৈরি করা যায়, সয়াবিন তেল, ক্যাস্টর অয়েল, মুলতানি মাটি ইত্যাদি।